একই সময়ে কারো প্রশান্তি আর কারো অশান্তিক্লিষ্ট জীবনকেই প্রবচনে ‘কারো পৌষমাস কারো সর্বনাশ’ নামে প্রচলিত আছে। মানুষের জীবনে এই বিপরীতমুখী বিপন্ন সময়ে সাধু-অসাধু তথা মানবিক-অমানবিক এই বৈপরীত্যচরিত্র চিহ্নিত হয়ে যায়। সুযোগসন্ধানী মানুষই বিপন্ন সময়কে পণ্য করে- এরা পাশবিক, অমানুষ। আর মানবিক মানুষ উজ্জীবিত হয় মানবতার সপক্ষে। মানুষের এই বিমিশ্র আচরণ-প্রবণতা কি শুধুই বাঙালি সমাজে, না অন্য সমাজেও দেখা যায়? এর অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ আছে বর্তমান গল্পগ্রন্থে। প্রশ্ন উত্থাপিত হতে পারে, স্বদেশে বাঙালি আর বিদেশে বাঙালি নিয়ম শৃঙ্খলা মান্যতায় একই চারিত্রে বিচার্য? না, তা নয়। এর সদুত্তোরের প্রতিচ্ছবি পাওয়া যাবে এই গল্পগ্রন্থে। চরিত্র-চিত্রণেও এখানে আছে শ্রদ্ধেয়-অশ্রদ্ধেয়, পাঙ্ক্তেয়-অপাঙ্ক্তেয়, দেশপ্রেমী-দেশদ্রোহী, সারল্যে- কৌটিল্যে, কৌলিন্যে-ক্লেদার্থে ক্রিয়াশীল নানা মানুষের সমুখ ও মুখোশ। এদের নিয়েই সম্মিলিত সুখ-সন্ধিৎসু কথাকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন প্রবাসী লেখক চৌধুরী শামসুদ্দীন- সর্বোপরি স্বার্থান্বেষী, সর্বনাশী সকলেরই হৃদয়ে মানবিক মননবিকাশী পৌষপার্বণ প্রোজ্জ্বল হওয়ার উন্মিলিত আলোর উজ্জীবনপ্রয়াস ও আহ্বান আছে এর মানবিক গল্পগুলোতে।
লে খ ক প রি চি তি
চৌধুরী শামসুদ্দীন
জন্ম সুনামগঞ্জ জেলার গচিয়া ১৯৬১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। পিতার নাম আনোয়ার রাজা চৌধুরী। শৈশব গ্রামে কাটলেও স্বাধীনতা-পরবর্তী ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস এবং বেড়েওঠা ঢাকাতেই। বিজ্ঞানে স্নাতক। কর্মজীবন শুরু ব্র্যাক-এ। বছর পাঁচেক কাজ করার পর দেশ ছেড়ে স্থায়ী বসতি গড়েন লন্ডনে। লেখালেখিতে হাতেখড়ি নাই, ‘আঙুলখড়ি’ বা ‘মুখবই’ অর্থাৎ ফেসবুকে ছোট ছোট লেখার মাধ্যমে। বাড়িতে পারিবারিক পাঠাগার থাকাতে শৈশব থেকেই সামান্য পাঠাভ্যাস ছিল। হয়তো এ কারণেই করোনাকালীন ঘরে বসে থাকার সময় এ লেখাগুলির জন্ম। বলা যায় অবসর সময়ে সৃজন-প্রয়াস। এ প্রয়াসেরই সমন্বিত সংকলন ‘পৌষমাস আর সর্বনাশের গল্প’।
Reviews
There are no reviews yet.